মোঃ ইফাজ খাঁ, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: টানা ১৩ দিন ধরে এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন হবিগঞ্জের বাগানগুলোর চা শ্রমিক। মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে তারা টানা এ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবারও দুপুর থেকে বিভিন্ন বাগানে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। দফায় দফায় চেষ্টা চালিয়েও তাদের কাজে ফেরানো যাচ্ছেনা।

কামাইছড়া বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি বিমল ভর জানান, শ্রমিকরা মজুরী বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ো যাবেন। তারা কোন অবস্থায়ই মানছেননা। তাই ৩০০ টাকা মজুরী বাস্তনায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা কাঞ্চন পাত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী নিজে আশাস দিয়েছেন কিনা সেটি তারা বিশ্বাস করতে পারছেননা। তারা মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে কেউ তাদের সাথে প্রতারণা করছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে আমরা কেউ মায়ের মতো আবার কেউ বড় বোনের মতো শ্রদ্ধা করি।

 

প্রধানমন্ত্রী যদি কোন একটি মিডিয়াতে লাইভে এসে বলে দেন যে বিষয়টি তিনি দেখবেন তবে সাথে সাথে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জেলার ২৪ বাগানের শ্রমিকরাই নিজ নিজ বাগানে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। দাড়াগাঁও বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি প্রেমলাল আহির বলেন, আমাদেরকে আজ (মঙ্গলবার) শ্রীমঙ্গলে লেভার হাউজে ডাকা হয়েছে। জানিনা তারা কি বলতে চান। তবে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত আছে।

জানা গেছে, দৈনিক মজুরী ৩০০ টাকার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে ৪ দিন ২ ঘন্টা করে কর্মবিরতি করেন চা শ্রমিকরা। এরপর তারা ১৩ আগস্ট থেকে পূর্নদিবস কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও তা সমাধান হয়নি। ইতিমধ্যে তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। শেষ পর্যন্ত শনিবারের বৈঠকে তাদের মজুরী ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হলে তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। পরবর্তীতে শ্রমিকরা এ মজুরী মানেননা জানিয়ে ফের আন্দোলনে নামেন।

কয়েক দফা বৈঠকের পর শেষ পর্যন্ত সোমবার তাদের একাংশ কাজে যোগ দিলেও মঙ্গলবার ফের তারা আন্দোলন শুরু করেন। এদিকে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেয়ার জন্য প্রতিনিয়তই আহ্বান জানাচ্ছেন জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। প্রধানমন্ত্রীর আশাসের কথা বলছেন। কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছেনা।